পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মী ও শিক্ষকদের ছুটি বাতিলের নির্দেশিকা। সমস্যায় পড়ছেন বহু কর্মী।

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য ছুটি বাতিলের নির্দেশিকা এখনও প্রত্যাহার না হওয়ায় কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। এই নির্দেশিকার কারণে কর্মীরা তাদের প্রাপ্য লিভ ট্রাভেল কনসেশন (এলটিসি) এবং হোম ট্রাভেল কনসেশন (এইচটিসি) সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। এই প্রতিবেদনে আমরা এই বিষয়টির বিস্তারিত আলোচনা করব এবং কীভাবে এই পরিস্থিতি কর্মীদের জীবনে প্রভাব ফেলছে তা তুলে ধরব।

সরকারি কর্মীদের ছুটি বাতিলের নির্দেশিকা: কেন এবং কীভাবে? 📋

গত ৭ মে, ২০২৫ তারিখে নবান্নের অর্থ দপ্তর থেকে একটি নির্দেশিকা (নং ১৬৮৪-এফ(পি২)) জারি করা হয়। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল যে, জনস্বার্থে এবং সরকারি পরিষেবার ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য সমস্ত রাজ্য সরকারি কর্মচারীর মঞ্জুর হওয়া ছুটি (চিকিৎসাজনিত লিভ ব্যতীত) অবিলম্বে বাতিল করা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পিছনে ভারত-পাক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপট ছিল বলে জানা যায়।

তবে, বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই স্থিতিশীল হওয়া সত্ত্বেও এবং কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অনুরূপ নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া সত্ত্বেও, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও এই নির্দেশিকা বহাল রেখেছে। এর ফলে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ এবং হতাশা বাড়ছে।

কর্মীদের উপর প্রভাব: পরিকল্পনা ও জীবনযাত্রায় বাধা 🚫

ছুটি বাতিলের এই নির্দেশিকা রাজ্য সরকারি কর্মীদের জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে, যেসব কর্মীদের সন্তানের স্কুলে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ চলছে, তারা কোনও ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারছেন না। শিক্ষকরাও এই পরিস্থিতির কারণে তাদের ভ্রমন পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছেন।

পারিবারিক পরিকল্পনায় বাঁধা

অনেক কর্মী তাদের পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটানোর জন্য ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন, যা এখন অনিশ্চিত।
মানসিক চাপ: দীর্ঘদিন ধরে লিভ না পাওয়ায় কর্মীদের মধ্যে মানসিক চাপ বাড়ছে।
আর্থিক ক্ষতি: এলটিসি এবং এইচটিসি সুবিধা না পাওয়ার আশঙ্কায় কর্মীরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

এই পরিস্থিতির কারণে কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ও অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।
এলটিসি ও এইচটিসি: কর্মীদের প্রাপ্য সুবিধা হুমকির মুখে ⭐

 

লিভ ট্রাভেল কনসেশন (এলটিসি) এবং হোম ট্রাভেল কনসেশন (এইচটিসি) সরকারি কর্মীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা। এই সুবিধার মাধ্যমে কর্মীরা ভ্রমণের জন্য আর্থিক সহায়তা পান। বর্তমান এলটিসি/এইচটিসি ব্লক বছর ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ এ শেষ হবে। কিন্তু ছুটি বাতিলের নির্দেশিকার কারণে অনেক কর্মী এই সুবিধা নিতে পারছেন না।

এই পরিস্থিতি যদি শীঘ্রই সমাধান না হয়, তাহলে বহু কর্মী তাদের প্রাপ্য আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। অনেকের মনে সন্দেহ, সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে এই নির্দেশিকা বহাল রেখে এলটিসি এবং এইচটিসি সুবিধার ব্যয় কমানোর চেষ্টা করছে।
কর্মী সংগঠনের প্রতিক্রিয়া ও দাবি ✊

এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক কর্মী সংগঠন নবান্নের অর্থ দপ্তরে আবেদন জানিয়েছে। তাদের দাবি, বাতিলের নির্দেশিকা অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হোক। এছাড়াও, তারা এলটিসি এবং এইচটিসি সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে।

নির্দেশিকা প্রত্যাহার

কর্মীরা চান অবিলম্বে এই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হোক।
ব্লক বছরের সময়সীমা বৃদ্ধি: এলটিসি/এইচটিসি ব্লক বছরের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
স্পষ্ট নির্দেশনা: সরকারের তরফে স্পষ্ট নির্দেশনা জারি করা হোক, যাতে কর্মীরা তাদের ছুটির পরিকল্পনা করতে পারেন।

কিন্তু এখনও পর্যন্ত নবান্ন থেকে কোনও ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি, যা কর্মীদের হতাশা আরও বাড়িয়েছে।
সরকারের নীরবতা: কেন এখনও সমাধান হচ্ছে না? ❓

 

নবান্নের অর্থ দপ্তরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব পি.কে. মিশ্রার সাক্ষরিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল যে, এই আদেশ পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। কিন্তু স্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্যেও কেন এই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কর্মীরা মনে করছেন, এই নীরবতার পিছনে হয়তো আর্থিক সাশ্রয়ের উদ্দেশ্য থাকতে পারে। তবে, এই ধরনের পদক্ষেপ কর্মীদের মনোবলের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

সমাধানের পথ: কী করা উচিত? 🛠

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রাজ্য সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। কর্মীদের দাবি মেনে ছুটি বাতিলের নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা এবং এলটিসি/এইচটিসি সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা জারি করা উচিত। প্রয়োজনে ব্লক বছরের সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে, যাতে কর্মীরা তাদের প্রাপ্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন।

উপসংহার: কর্মীদের অপেক্ষা ⏳

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীরা এখন নবান্নের পরবর্তী নির্দেশের অপেক্ষায়। তাদের প্রত্যাশা, সরকার দ্রুত এই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে তাদের ছুটি এবং আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করবে। এই পরিস্থিতি কেবল কর্মীদের ব্যক্তিগত জীবন নয়, সরকারি পরিষেবার মানের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, সরকারের কাছে কর্মীদের একটাই দাবি—দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন, যাতে তারা তাদের প্রাপ্য সুবিধা এবং অবকাশের পরিকল্পনা নির্বিঘ্নে করতে পারেন।

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন