SIP মানেই কি লাভের ফোয়ারা নিশ্চিত? কি বলছেন বিশেষজ্ঞরা ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ইদানীং আমার-আপনার-আমজনতার মধ্যে ভিড়ে মিশে থাকা অনেকে এ রকমটাই মনে করেন। বাজার টালমাটাল থাকলে, হামেশাই দর ওঠাপড়ার মধ্যে ইউনিট কম দামে খুঁটে তুলে নিয়ে লাভের গুড়ে জাল দিতে এর মতো ‘কার্যকর’ অস্ত্র দু’টো নেই। এই দাবি করে বিনিয়োগের পুঁজি এক থোকে না ঢেলে কিস্তিতে ঢালতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন অনেক লগ্নিকারীই। তা না হলে ২৩-২৪ অর্থবর্ষের থেকে ২৪-২৫ অর্থবর্ষে এক লাফে দেশে ৪৫% বাড়ত না এসআইপি’র মোট কন্ট্রিবিউশন। ২৩-২৪ অর্থবর্ষে যেখানে দেশে ৪.২৮ কোটি নতুন এসআইপি অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল, সেখানে এপ্রিল ২৪-মার্চ ২৫ পর্বে তা পৌঁছে গিয়েছে ৬.৭৯ কোটিতে।

প্রশ্ন হচ্ছে, এঁরাই কি একমাত্র চালাক? এসআইপি স্ট্র্যাটেজিই কি লগ্নির লক্ষ্মী-লাভের একাঘ্নী বাণ?

যাঁরা এই পথে হাঁটছেন, তাঁদের জ্ঞাতার্থে বলতেই হচ্ছে, গত ১৫ বছরের পরিসংখ্যান বলছে, লাভ-লোকসান লগ্নির টাইমিং-এর উপর ওঠা-পড়া করলেও, যেটায় আগমার্কা গ্যারান্টির ছাপ দেওয়া যাচ্ছে, সেটা হলো, এসআইপি ইনভেস্টমেন্টে যত বেশিদিন আপনি লেগে থাকবেন, তত কিন্তু কমবে আপনার ‘ক্ষতির’ ঝুঁকি। ইকোনমিক টাইমস-ক্রিসিল ইন্টেলিজেন্স এসআইপি স্টাডি ২০২৫-এও একই তথ্য উঠে এসেছে। যে স্টাডিতে অবশ্য শুধুমাত্র পিয়োর ইক্যুইটি ফান্ডের প্রধান ৭টি ক্যাটিগোরি, লার্জ ক্যাপ-মিডক্যাপ-স্মল ক্যাপ, লার্জ-মিডক্যাপ, ফ্লেক্সিক্যাপ, মাল্টি ক্যাপ এবং ট্যাক্স সেভিংসকেই (ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস) বিবেচনা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:- বাড়ছে করোনা, রেল যাত্রীদের ওপর কোন নির্দেশিকা জারি করল ভারতীয় রেল ?

যত বেশি দিন রাখব বলছেন, ‘বেশি’ মানে কত? প্রশ্ন উঠতেই পারে মনে। সমীক্ষকদলের তরফে জানানো হয়েছে, ঊর্ধ্বসীমা তো আপনার চয়েস। তবে তাঁরা ১০ বছরকে ‘দীর্ঘ’ সময় ধরে নিয়েছেন বিশ্লেষণের সুবিধার্থে। যেখানে দেখা গিয়েছে, সর্বাধিক ১০ বছর টানা এই ধরনের ফান্ডে এসআইপি ইনভেস্টমেন্ট হরাইজ়নে ‘ক্ষতির’ সম্ভাবনা পাটিগণিতের অঙ্কে নেমে এসেছে শূন্যে। ‘সর্বাধিক’, কারণ মাল্টি-ক্যাপ ফান্ডে ৭ বছরেই পজিটিভ রিটার্ন মিলেছে, ফ্লেক্সিক্যাপে সেখানে ৮ বছরে, লার্জক্যাপে ৯ বছরে আর মিড ও স্মল ক্যাপে ১০ বছরে। তাই গোদা হিসেবে ১০ বছরকে ‘ব্রেক-ইভেন’ ধরে দৌড় শুরু করলে আর লোকসানের ভয় থাকবে না—এমন একটা ছক কষে এগনোর কথা ভাবতে পারেন।

হয়তো এর পরেও তো আমার ‘ক্ষতিই’ হয়েছে দাবি তোলার আগে মনে রাখুন, হিসেবের সুবিধার জন্য শুধু মাসের প্রথম দিনেই করা এসআইপি’কে নেওয়া হয়েছে অ্যানালিসিসের জন্য। মাসের যে কোনও ধরে বিচার করতে গেলে, তার দায়িত্ব এবং ক্যালকুলেশনের ভার, দু’টোই কিন্তু আপনার।

এতক্ষণ ক্ষতি-ক্ষতি করার পর একটু লাভের হদিসও দেওয়া যাক। কারণ শুধুমাত্র নেগেটিভ রিটার্নের ভয় মাথায় রেখে তো কেউ লগ্নি করে না। লাভের উপচে পড়া অঙ্ক আঁজলা করে তুলতেই তো এত তামঝাম। ধরে নিন, বার্ষিক অন্তত ১০%+ রিটার্ন আপনার কাছে ‘ভালো’। সেক্ষেত্রে জেনে রাখুন ৫ বছরের সিপে >১০% রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশের বেশি। ১০ বছরের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা ৮৯.১০%। ১০ বছরের সিপে >১৫% রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা ৪৫.৩% আর >১৫% রিটার্নের ৮.৪%। গড় করলে দেখা যাচ্ছে ১০ বছরের সিপে অ্যাভারেজ রিটার্ন ১৪.৬%।

অঙ্ক এ রকম বলছে, রিপোর্ট এ রকম বলছে বলে তড়িঘড়ি শুরু করে দেবেন না। শুধু একটু ভাবুন, ব্যস…!

আরও পড়ুন:- ক্যানসারের চিকিৎসায় বাঙালি বিজ্ঞানীদের যুগান্তকারী আবিষ্কার। আরও সহজ হবে চিকিৎসা ?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন