বরাদ্দে গুরুত্ব ছাত্র-জনতাকে, আর্থিক সংকটে কেটেছেঁটে বাজেট পেশ ইউনূস সরকারের

By Bangla News Dunia Dinesh

Published on:

Bangla News Dunia, দীনেশ : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটেই ভাটার টান। আওয়ামি লিগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে সংকোচন শুরু হয়েছে, সোমবারের বাজেট থেকে সেটা বোঝা গিয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও বাজেটের আয়তন তার আগের বাজেটের চেয়ে কমেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকার সময় গতবছর যে বাজেট পেশ করা হয়েছিল, তার পরিমাণ ছিল ৭ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এবার তা কমে হয়েছে ৭ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকা। বাজেটে কিছু পণ্যের দাম কমানো হলেও মূলগতভাবে জোর দেওয়া হয়েছে রাজস্ব আদায়ে। যার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্য ও পরিষেবায় করের পরিমাণ বেড়েছে। অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে আয়কর কাঠামো। বিপরীতে হাসিনাবিরোধী ছাত্র-জনতাকে সন্তুষ্ট রাখতে প্রকল্প চালু করা হয়েছে। তাতে বরাদ্দের পরিমাণও নেহাত কম নয়।

আরও পড়ুন : গ্রীষ্মে দই ভীষণ উপকারী, তবে এইসব ক্ষেত্রে বেশি খাওয়া উচিত নয়।

বাজেট পেশ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শীঘ্রই জুলাই গণ অভ্যুত্থানের শহিদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ভাতা প্রদানের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এছাড়া তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। ২০২৫-’২৬ অর্থবছরে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার এবং আহতদের জন্য ৪০৫ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি।’

আরো পড়ুন : ‘মিনিমাম ব্যালেন্স’-এর নিয়ম তুলে দিল এই সরকারি ব্যাঙ্ক ! বড় স্বস্তি গ্রাহকদের

এদিন পণ্য ও পরিষেবা ক্ষেত্রে যেসব বর্ধিত কর চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেগুলির মেয়াদ ২০২৮ বা ২০৩০ সাল পর্যন্ত। কোনও অন্তর্বর্তী সরকার এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে কি না সেই প্রশ্ন উঠছে। রাজনৈতিক দলগুলির বড় অংশের দাবি মেনে ইউনূস সরকার ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন করতে কতটা আগ্রহী, এদিনের বাজেট তা নিয়ে জল্পনা উসকে দিয়েছে। সংসদ না থাকায় সোমবার টেলিভিশন ও রেডিও-র মাধ্যমে বাজেট পেশ করেন অর্থ উপদেষ্টা। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। যা দেশের মোট জিডিপির ৯ শতাংশ। বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ২ লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি টাকা। প্লাস্টিক পণ্য, মোবাইল, গ্যাস সিলিন্ডার, সিগারেট, মাইক্রোওয়েভ, ওয়াশিং মেশিন, বিদেশি চকোলেট, অনলাইন পণ্য, নির্মাণ ক্ষেত্র, সুতো, সাবান, শ্যাম্পু, ওটিটি প্ল্যাটফর্মের ওপর বাড়তি কর চাপানো হয়েছে। কর কমেছে এসি, ফ্রিজ, ই-বাইকের মতো কিছু বিলাস দ্রব্যে।

আরও পড়ুন : LPG সিলিন্ডার থেকে PF, UPI, ফিক্সড ডিপোজিট ! বদলে যাচ্ছে বহু নিয়ম

ইউনূস সরকারের ওপর আমেরিকার প্রভাব নিয়ে তর্ক আরও জোরালো হয়েছে এবারের বাজেটে। সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আমেরিকার সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনায় বসবে বাংলাদেশ। সেদিকে লক্ষ্য রেখে ১০টি পণ্যে আমদানি শুল্ক পুরোপুরি প্রত্যাহার, ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানো, ৯টি পণ্যে সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক কমানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আমদানি পণ্যে শুল্ক কমানো আগেই হয়ে গেলে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় কীভাবে দর কষাকষি করবে বাংলাদেশ, সেই প্রশ্ন তুলেছেন অর্থনীতিবিদরা।

এদিন ৩০টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতিতে ঢাকায় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সবার আলোচনার ভিত্তিতে আমরা জুলাই সনদ করব। এটাই আমাদের লক্ষ্য। এখানে আমাদের সবার ঐকমত্য তুলে ধরব।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বে অনেকগুলো বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসে গিয়েছি। আরেকটু চেষ্টা করলে আমাদের তালিকায় আরেকটা সুপারিশ যুক্ত হতে পারে। এই সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি।’

 

Bangla News Dunia Dinesh

মন্তব্য করুন