স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদে চাকরি হারানো কর্মীদের রাজ্য সরকারের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আইনি লড়াই অব্যাহত। এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে দু’পক্ষের জোরালো সওয়াল-জবাবের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ফলে, চাকরিহারাদের ভাতার ভবিষ্যৎ আপাতত আদালতের রায়ের উপরই নির্ভর করছে
আরও পড়ুন : ১ জুলাই থেকে বদলে যাচ্ছে তৎকাল টিকিট কাটার নিয়ম !
ঘটনার প্রেক্ষাপট
২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর চাকরি বাতিল হয়। এই চাকরিহারাদের মধ্যে থাকা গ্রুপ সি কর্মীদের মাসিক ২৫,০০০ টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসিক ২০,০০০ টাকা করে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মামলাকারীরা, যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে শোরগোল শুরু হয়েছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণ ও সওয়াল-জবাব
শুনানির সময় আদালত কক্ষে দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে চলে তীব্র আইনি বিতর্ক। রাজ্যের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও হয় সওয়াল।
- রাজ্যের প্রশ্ন: রাজ্যের অ্যাডভোকেট এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে মামলাকারীদের স্বার্থ ঠিক কীভাবে জড়িয়ে রয়েছে? কেন তাঁরা এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবেন?”
- মামলাকারীদের যুক্তি: মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এর তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁর প্রধান যুক্তিগুলি ছিল:
- সুপ্রিম কোর্টের অবমাননা: তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ওই কর্মীদের চাকরি বাতিল হয়েছে। সেই নির্দেশের অন্য মানে করা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ রয়েছে এমন বিষয়ে আইনসভা বিপরীত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।”
- জনগণের টাকার প্রশ্ন: শামিম আরও যুক্তি দেন, “কর দেন এমন যে কোনও নাগরিক সরকারের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। জনগণের টাকা কোথায় এবং কীভাবে খরচ হচ্ছে, তা জানার অধিকার সকলের রয়েছে। ফলে এই মামলায় মামলাকারীদের স্বার্থও সরাসরি জড়িত।”