ভারতীয়দের সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ ৩০০% বৃদ্ধি পেয়েছে, চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- চর্মচক্ষে সোনার কেল্লা দেখেননি অনেকেই। কিন্তু ‘সোনার কেল্লা’ নামটা বলতেই যেমন অনেকেরই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সত্যজিতের ফেলুদা-মুকুল-ডক্টর হাজরারা, তেমনই সুইস ব্যাঙ্ক বলতেই আমজনতার সামনে ভেসে ওঠে এমন একটা ‘হাই-ফাই’ ব্যাঙ্কের ছবি, যেখানে দেশবিদেশ থেকে ধনকুবেররা হাজির হন, নিজেদের লক্ষ-কোটি ডলারের ‘কালা-ধন’ লুকোতে।

সুইস ব্যাঙ্কের নিয়মে, সেখানকার অ্যাকাউন্টে কার কত অর্থ গচ্ছিত আছে, এমনকী কারও অ্যাকাউন্টও আদৌ আছে কি না, সেই তথ্যও কোনও দেশের পুলিশ-প্রশাসন মায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকেও জানাতে বাধ্য নন কর্তৃপক্ষ।

বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে সেই তথ্যের নাগাল পাওয়া যে কী শক্ত কাজ, তার প্রমাণ নয়াদিল্লির সাউথ ব্লক এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের রয়েছে।

তবে বার্ষিক ভাবে এক রিপোর্ট প্রকাশ করেন সুইস ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ, যেখান থেকে একটা আন্দাজ পাওয়া যায়, কোন দেশের আমানত কী ভাবে ওঠাপড়া করেছে সংশ্লিষ্ট বছরে।

সেখান থেকেই দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালে সুইস ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে (এসএনবি) ভারতীয়দের আমানতের পরিমাণ ২০২৩-এর তুলনায় ৩ গুণেরও বেশি বেড়ে পৌঁছে গিয়েছে প্রায় ৩৭,৬০০ কোটি টাকায়।

তবে মনে রাখতে হবে, এই টাকার মধ্যে দাগিয়ে দেওয়া ‘কালো টাকা’ বলে জমা করা গোপন লগ্নিকারীদের গচ্ছিত আমানত এবং বিদেশি প্রতিষ্ঠানের তরফে যে অর্থ এসএনবি’তে জমা করা হয়েছে, তাকে রাখা হয়নি বলে জানিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন:- পুরুষদের তুলনায় মহিলারা বেশি রক্তাল্পতায় ভোগেন, কিভাবে বুঝবেন হিমোগ্লোবিন কমে যাচ্ছে ?

তার হদিশ পাওয়া গেলে অঙ্কটা কোথায় পৌঁছে যাবে, তা কল্পনা করা ছাড়া কোনও পথ নেই আমার-আপনার কাছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, এসএনবি’র স্থানীয় শাখা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে জমা থাকা ভারতীয় অর্থকেই কেবল এই হিসেবের মধ্যে ধরা হয়েছে।

জমাকৃত অর্থের এই বিপুল পরিমাণ লাফের নিরিখে গত ক্যালেন্ডার বর্ষে ব্যক্তিগত ভাবে ভারতীয় অ্যাকাউন্টধারীদের আমানত বৃদ্ধির পরিমাণ নেহাতই নগণ্য, বৃদ্ধি মাত্র ১১%। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ৩,৬৭৫ কোটি টাকা।

মনে রাখার মতো রয়েছে একাধিক। গত বছরে সুইস ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ একাধিক দফায় সুদের হার ছেঁটে ডিসেম্বরে তা নামিয়ে এনেছিলেন শূন্যের একদম কাছে। তবু সুইস-নিরাপত্তার জোরে বিপুল অঙ্কের সুদ অবলীলায় ছেড়ে দিয়েছেন ভারতীয় ধনকুবেররাও।

বৃহস্পতিবারই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আপাতত সুদের হার নামিয়ে আনা হলো ‘শূন্যে’। যার অর্থ পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া অবধি জমা থাকা আমানতে কোনও সুদ মিলবে না। যদিও ব্যাঙ্কের তরফে এ দিন আশ্বাস মিলেছে, আপাতত সুদের হার ঋণাত্মক স্তরে নিয়ে যাওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই তাদের।

মনে রাখতে হবে গত বছর প্রকাশিত এই একই রিপোর্টে এসএনবি’র তরফে জানানো হয়েছিল, ২০২৩ সালে ভারতীয়দের আমানত তার আগের বছরের থেকে এক ধাক্কায় ৭০% নেমে চলে এসেছে ১১,০৩৫ কোটি টাকায়।

গত চার বছরে যে স্তর সর্বনিম্ন। আবার এ দিন প্রকাশিত তথ্য বলছে, এক বছরেই লম্বা লাফ মেরে তলানি থেকে তা পৌঁছে গিয়েছে মগডালের কাছাকাছি। উল্লেখ্য, এসএনবি’র সরকারি হিসেব বলছে, ২০২১ সালে ভারতীয়দের আমানত পৌঁছে গিয়েছিল প্রায় ৪১,০০০ কোটি টাকায়।

যা গত ১৪ বছরে সর্বোচ্চ। অবশ্য তা সর্বকালীন রেকর্ড ৭৬,০০০ কোটি টাকার ধারেকাছে নেই, যে রেকর্ড এখনও ২০০৬ সালের দখলেই রয়েছে। ২০২৪ সালের লাফে দেশ হিসেবে ভারত তালিকায় আগের বছরের ৬৭ থেকে উঠে এসেছে ৪৮-তম স্থানে।

তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য হলো, গত বছরে ব্যাঙ্কে বাংলাদেশ থেকে জমার পরিমাণ বেড়েছে অবিশ্বাস্য ৩৩ গুণ। তালিকার একদম উপরে থাকা প্রথম পাঁচ দেশ হলো যথাক্রমে গ্রেট ব্রিটেন, ইউএসএ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জার্মানি, ফ্রান্স।

আরও পড়ুন:- ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে ভারতেরও ক্ষতি হতে পারে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার, কিভাবে ?

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন