১০৬টি সন্তান! ‘টেলিগ্রাম’-এর মালিক সব সন্তানকে সম্পত্তির সমান ভাগ দিচ্ছেন।

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:-  ‘নিজের ১০৬ সন্তানদের মধ্যে ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্পত্তি ভাগ করে দেব।’ এমনই অভিনব পরিকল্পনার কথা জানালেন, টেলিগ্রামের সিইও পাভেল দুরভ। ফরাসি ম্যাগাজিন Le Point-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই প্ল্যান জানান তিনি।

পাভেল দুরভের বয়স বর্তমানে ৪০ বছর। খুব অল্প বয়সেই তিনি ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপ চালু করেছিলেন। সেই অ্যাপের এখন ১০০ কোটিরও বেশি ইউজার। আর তার দৌলতেই হাজার-হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন পাভেল। পাশাপাশি বেশ হ্যান্ডসামও তিনি। সেই কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ চর্চায় থাকেন টেলিগ্রাম প্রতিষ্ঠাতা। তবে এবার তাঁর শিরোনামে আসার কারণ সত্যিই অভিনব।

পাভেল দুরভ জানিয়েছেন, ৩ জন পার্টনারের সঙ্গে, তাঁর সাধারণ উপায়ে জন্মানো সন্তান ৬ জন। বাকি ১০০ জন স্পার্ম ডোনেশনের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে জন্মেছে।

কিন্তু এই ৬ জনের সঙ্গে ১০০ জনের বিন্দুমাত্র ফারাক করতে চান না পাভেল। তিনি বলেন, ‘আমি প্রাকৃতিক ভাবে জন্ম নেওয়া সন্তান এবং স্পার্ম ডোনেশন থেকে জন্মানো সন্তানদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ করি না। সকলেই আমার সন্তান এবং সকলেই সমান অধিকার পাবে।’

গত ১৫ বছরে ১২টি দেশে গোপনে স্পার্ম ডোনেশন করেছেন পাভেল। তার মাধ্যমেই এই সন্তানরা জন্মেছে।

আরও পড়ুন:- বড় খবর ! পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের অফিস টাইম বাড়ছে। আসছে নতুন টাইম টেবিল

Bloomberg Billionaires Index এবং Forbes-এর তথ্যানুযায়ী, বর্তমানে দুরভের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩.৯ বিলিয়ন থেকে ১৭.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেই হিসাব অনুযায়ী, প্রত্যেক সন্তান আনুমানিক ১৩১ থেকে ১৬১ মিলিয়ন ডলারের(₹১,১৩৪.৩৯- ১,৩৯৪.১৯ কোটি) উত্তরাধিকারী হতে চলেছেন। তবে একটি বড় শর্তও রয়েছে। আগামী ৩০ বছর পর্যন্ত তাঁরা এই টাকা হাতে পাবেন না। অর্থাৎ, ১৯ জুন ২০৫৫ সালের আগে কেউই সেই টাকা হাতে পাবেন না। কিন্তু এমন পরিকল্পনা কেন?

এই সিদ্ধান্তের পেছনে তাঁর যুক্তি, ‘আমি চাই, তারা যেন স্বাভাবিক জীবনযাপন করে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে ও নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে শেখে। শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের উপর নির্ভর করেই যেন জীবন না কাটায়।’

জানা গিয়েছে, উইল তৈরির সময়েই পাভেল দুরভ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, পাভেল দুরভ নিজে কিন্তু বর্তমানে নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। ফ্রান্সে বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে একটি বড় মামলার তদন্ত চলছে। ২০২৪ সালের অগাস্টে আজারবাইজান থেকে একটি প্রাইভেট জেটে ফ্রান্সের বোর্ঝে বিমানবন্দরে এসেন নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল ফরাসি পুলিশ।

অভিযোগ -টেলিগ্রাম প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে শিশুদের উপর যৌন নিপীড়ন, মাদক চোরাচালান, অর্থ পাচার এবং অপরাধচক্র চলছে। আর তাতে নির্বিকার থেকে অপরাধে পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন পাভেল।

যদিও দুরভ তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, ‘আজ পর্যন্ত এমন কোনও তথ্য-প্রমাণ মেলেনি, যার থেকে এটা প্রমাণ হয় আমি এক সেকেন্ডের জন্যও কোনও ভুল কাজ করেছি।’ সেই সঙ্গে তাঁর স্পষ্ট কথা, ‘প্রাইভেসি পলিসি নিয়ে অনড় থাকার কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে নানা দেশে শত্রু তৈরি হচ্ছে।’

টেলিগ্রাম ২০১৩ সালে চালু হয়েছিল। এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন এবং ইউজার ডেটা নিয়ে শুরু থেকেই বেশ কড়া ছিল টেলিগ্রাম। আর সেই কারণেই দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এই অ্যাপ। বর্তমানে গোটা বিশ্বে প্রায় ১০০ কোটি ইউজার এই প্ল্যাটফর্মে। তবে, এই প্রাইভেসিকে কাজে লাগিয়েই বহু অপরাধী টেলিগ্রামের অপব্যবহার করে। এদিকে কড়া প্রাইভেসি নীতির কারণে কোনও দেশের তদন্তকারী সংস্থারাও সেই ডেটার নাগাল পায় না। সেই কারণেই বহু দেশ টেলিগ্রামের বিরুদ্ধে বারে বারে সরব হয়েছে।

তবে নিজের যুক্তিতে অনড় বিলিয়নেয়ার পাভেল। তাঁর কথায়, ‘কোনও অপরাধী যদি আমাদের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, তার মানে এই নয় যে যাঁরা প্ল্যাটফর্মটি চালাচ্ছেন, তাঁরাও অপরাধী।’

আরও পড়ুন:- জুলাই থেকে ATM থেকে টাকা তোলার নিয়মে বড়সড় বদল! না মানলে ডবল খরচ হবে

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন