Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে মেঘভাঙা বৃষ্টি ৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ ৷ ধরমশালায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে ভেসে যান অন্তত 20 জন শ্রমিক ৷ প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কাংড়া জেলার মানুনি খাদে গতকাল মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে হঠাৎ করে জলস্তর বৃদ্ধি পায়, সেই সময়ই ঘটে যায় অঘটন ৷ দু’জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৷ এখনও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন ৷
ভেসে গিয়েছেন শ্রমিকরা
প্রশাসন সূত্রে খবর, মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হিমাচল প্রদেশের কুলু এবং কাংড়া জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। বুধবার কাংড়ায় ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী জলবিদ্যুৎ প্রকল্পে কাজ করছিলেন 15-20 জন শ্রমিক ৷ সেই সময় মানুনি খাদে জল বাড়তে শুরু করে ৷ সেখানকার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে প্রকল্পের কাজ স্থগিত করা হয়েছিল ৷ তাই শ্রমিকরা ঘটনাস্থলের কাছে একটি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ৷ সে সময় তাঁরা জলের তোড়ে ভেসে যান ৷ খাদ থেকে দু’জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন:- ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা জুকারবার্গ একজনকেই ৮৬০ কোটি টাকা বেতন দেবেন, কী করতে হবে তাকে ?
শোকপ্রকাশ জেপি নাড্ডার
কত জন এই মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না ৷ রাজ্যে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করা হয়েছে। নজরদারি চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা। তিনি লিখেছেন, “মানুনি খাদে আচমকা জলপ্রবাহ বেড়ে গিয়েছে। তাতে অনেক শ্রমিক ভেসে গিয়েছেন ৷ আমি দুঃখিত। মৃতদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা রইল।”
আবহাওয়া দফতরের সতর্কতা
অন্যদিকে, কুলু জেলার জিভা নালায় তিন জনের ভেসে যাওয়ার খবর মিলেছে প্রশাসন সূত্রে। জেলা প্রশাসনের মতে, চারটি বাড়ি ভেঙে পড়েছে ৷ বহু যানবাহন ভেসে গিয়েছে । শতাধিক গাছপালা খাদে জলে ভেসে গিয়েছে ৷ পাশাপাশি, ধৌলাধর পর্বতমালায় হালকা তুষারপাত হয়েছে, যার ফলে তাপমাত্রাও হ্রাস পেয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তরফে, আগামী বেশ কিছুদিন ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে । বন্যার আশঙ্কা রয়েছে ৷
দুর্যোগ পরিস্থিতিতে প্রশাসন প্রস্তুত
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্দেশক ডিসি রানা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন এবং সকলকে সতর্ক থাকতে বলেছেন। তিনি জানান, বর্ষার সময় প্রায়শই মেঘভাঙা বৃষ্টির ঘটনা ঘটে। দুর্যোগ প্রতিরোধে প্রশাসন প্রস্তুত । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুও পরিস্থিতির উপর নিয়মিত নজর রাখছেন। তিনি সমস্ত জেলার ডিসি এবং এসিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
বিয়াস নদীতে তীব্র জলোচ্ছ্বাস
বুধবার ভারী বৃষ্টিপাতের পর বিয়াস নদী ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে ৷ লাগাতার বৃষ্টির জেরে মানালি-চণ্ডীগড় জাতীয় সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানালির কাছে বিয়াস অর্থাৎ বিপাশা নদীর জলোচ্ছ্বাস বাড়তে থাকায় হাইওয়ের কিছুটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ পাশাপাশি, পাহাড়ি রাজ্যের অন্যান্য নদীগুলির জলস্তরও হু হু করে বাড়ছে । কুলু থেকে মান্ডি পর্যন্ত বিয়াস নদীর এই ভয়াবহ রূপ দুই বছর আগের বিপর্যয়ের কথা মনে করাচ্ছে ৷ হিমাচল পুলিশ থেকে শুরু করে প্রশাসন, পর্যটকদের নদীর তীরের কাছে না-যাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:- চিনে পাওয়া গেল ভয়াবহ ‘Deadly Brain Virus’; আবারও কি অতিমারি ?