Bangla News Dunia, Pallab : পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নতুন করে গতি আসতে চলেছে। রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ইতিমধ্যেই নতুন টেট (TET) পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। সম্প্রতি পর্ষদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ই-টেন্ডার। পরীক্ষার সময় ফ্রিস্কিং, বায়োমেট্রিক যাচাই এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেসরকারি সংস্থার সহায়তা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞপ্তি সুত্রে।
আরও পড়ুন : যৌন অক্ষমতার সমস্যায় সেরা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা !
পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বড় পদক্ষেপ
দু’বছর পর ফের প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ টেট আয়োজনের দিকে এগোচ্ছে যেমনটা আগে জানিয়েছিল পর্ষদ সভাপতি। এই ই-টেন্ডারই তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। তবে এই মুহূর্তে যে টেট পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা মূলত স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগের জন্য। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাজ্যে প্রায় তিন হাজার স্পেশ্যাল এডুকেটরের পদ ফাঁকা রয়েছে। এই পদে নিয়োগের জন্য দ্রুত টেট আয়োজন করতে হবে।
ডিএলএড পরীক্ষার প্রস্তুতিও চলছে
আগামী আগস্ট মাসে ডিএলএড (D.El.Ed) পরীক্ষাও হতে চলেছে। সেই পরীক্ষার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্যও বেসরকারি সংস্থার সহায়তার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্ব যেমন থাকবে পুলিশের হাতে, তেমনই পরীক্ষা কেন্দ্রের ভেতরের নিরাপত্তা দেখভালের দায়িত্ব পাবে বেসরকারি সংস্থা।
নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু হতে পারে
এদিকে পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মেনে স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ করতে হবে। যদিও এই নিয়োগ এখন ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত আইনি জটের মধ্যে আটকে আছে। রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেত পেলেই এক মাসের মধ্যেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হতে পারে।
বেসরকারি নিরাপত্তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন
তবে, পরীক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বেসরকারি সংস্থাকে যুক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। রাজ্য সরকারের অধীনে পুলিশ, র্যাফ এবং সিভিক ভলান্টিয়ার থাকতেও কেন বেসরকারি সংস্থার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। শিক্ষকমহলের একাংশের দাবি, পরীক্ষার সম্পূর্ণ দায়িত্ব রাজ্যের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে থাকা উচিত।
পুরনো টেটের ফল এখনও ঝুলে
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত টেট পরীক্ষার ফল এখনও প্রকাশিত হয়নি। এমনকি ২০২২ সালের টেট পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলেও শূন্যপদের তালিকা এখনও প্রকাশ করেনি রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এই দীর্ঘসূত্রিতা নিয়েও শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পর্ষদের দাবি, ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত সমস্যার কারণেই নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।
শিক্ষকমহলের ক্ষোভ
রাজ্যের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “একটার পর একটা পরীক্ষা হচ্ছে, কিন্তু নিয়োগ হচ্ছে না। পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু চাকরির নিশ্চয়তা দেওয়া হচ্ছে না। এতে পরীক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়ছেন।”
শীঘ্রই আসতে পারে বিজ্ঞপ্তি
সব মিলিয়ে, রাজ্যে শীঘ্রই নতুন নিয়োগের জন্য আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগ এবং ডিএলএড পরীক্ষার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তবে কবে এর চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে এবং কবে আবেদন শুরু হবে, তা এখনও পর্ষদের তরফে জানানো হয়নি।