Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- স্কুল থেকে বাড়ি না-ফিরে বন্ধুর সঙ্গে গল্প করছিল 14 বছরের কিশোর ৷ আর সেই কারণেই নাকি কিশোরী এবং তার বন্ধুকে আটকে রেখে হেনস্তা করেন স্থানীয় কয়েকজন ! পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৷ সেই ঘটনার পরেই বৃহস্পতিবার সকালে গলায় ফাঁস লাগা অবস্থায় উদ্ধার হল কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ ৷
ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর থানার গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ৷ মৃত কিশোরীর পরিবার জানিয়েছে, বুধবার প্রতিদিনের মতো স্কুলে গিয়েছিল সে ৷ তবে, স্কুল ছুটির পর বাড়ি না-ফিরে, গয়েশপুর হাসপাতালের পাশে একটি মাঠে বসে এক বন্ধুর সঙ্গে গল্প করছিল ওই কিশোরী ৷ অভিযোগ, সেই সময় স্থানীয় কয়েকজন সেখানে আসেন এবং তাদের সেখান থেকে ধরে নিয়ে যান ৷ একটি জায়গায় তাদের দু’জনকে আটকে রাখা হয় দীর্ঘক্ষণ ৷
স্থানীয়রাই পরে শান্তিপুর থানায় খবর দেন ৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরী এবং তার বন্ধুকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় ৷ এরপর কিশোরীর বাড়িতে ফোন করে খবর দেয় পুলিশ ৷ রাত 10টা নাগাদ কিশোরীর বাবা থানায় গিয়ে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যান ৷ কিন্তু, এই ঘটনার গভীর প্রভাব তার মনে পড়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন কিশোরীর বাবা ৷
আরও পড়ুন:- বুকে ব্যথা অবহেলা নয়, গ্যাসের কারণেও হতে পারে। আয়ুর্বেদিক উপায়ে নিরাময় জেনে নিন
তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে তিনি রোজকার মতো কাজে বেরিয়ে যান ৷ তাঁর মেয়ে বাড়িতেই ছিল ৷ সকালে স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করে কিশোরী ৷ কিন্তু, তাকে স্কুলে যেতে নিষেধ করেন তার মা ৷ সেই নিয়ে মন খারাপ করে ঘরে ঢুকে যায় সে ৷ পরে স্নান করে জামাকাপড় বদলানোর জন্য ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয় ৷ সেই সময় কিশোরীর মা রান্না করছিলেন ৷
দীর্ঘক্ষণ মেয়ে ঘর থেকে না-বেরনোয়, তাকে ডাকতে যান তিনি ৷ দেখেন, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ৷ ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না ৷ এরপর বাড়ির অন্যান্য লোকজন এবং প্রতিবেশীরা মিলে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন ৷ দেখা যায়, গলায় ফাঁস লাগিয়ে সিলিং থেকে ঝুলছে ওই কিশোরী ৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কিশোরীকে প্রথমে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে ৷ পরে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ৷
কিশোরীর বাবা অভিযোগ করেছেন, “মেয়ে কাল স্কুল থেকে গয়েশপুর হাসপাতালের পাশে একটি মাঠে বন্ধুর সঙ্গে বসে গল্প করছিল ৷ ওখানকার কয়েকজন ওদের ধরে আটকে রাখে ৷ তারপর পুলিশের হাতে তুলে দেয় ৷ আমি রাতে খবর পেয়ে মেয়েকে থানা থেকে নিয়ে আসি ৷ সকালেও ভালো ছিল ৷ স্কুলে যেতে চেয়েছিল, ওর মা যেতে দেয়নি ৷ আর তারপরেই ঘরে ঢুকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে দেয় ৷ কালকের ওই ঘটনার অপমানে ও এই কাজ করেছে ৷”
পুলিশ সূত্রে খবর, কিশোরীর পরিবার এখনও এই ঘটনায় কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি ৷ পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে ৷ এ নিয়ে রানাঘাট জেলা পুলিশের সুপার আশিস মৈজ্য বলেন, “ওই নাবালিকার মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে স্পষ্ট হয়ে যাবে মৃত্যুর কারণ ৷ অন্যদিকে, পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ হাতে পেলে বিষয়টা নিয়ে তদন্ত করবে পুলিশ ৷”
(আত্মহত্যা কোনও সমাধান নয় ৷ যদি আপনার মধ্যে কখনও আত্মহত্যার চিন্তা মাথাচাড়া দেয় বা আপনার কোনও বন্ধু বা পরিচিত এই সমস্যায় জর্জরিত হন, তাহলে ভেঙে পড়বেন না। জানবেন, এমন কেউ আছে যে আপনার যন্ত্রণা, আপনার হতাশা ভাগ করে নিতে সদা-প্রস্তুত। আপনার পাশে দাঁড়াতে তৎপর। সাহায্য পেতে দিনের যে কোনও সময়ে 044-24640050 এই নম্বরে কল করুন স্নেহা ফাউন্ডেশনে। টাটা ইন্সটিটিউট অফ সোশাল সায়েন্সের হেল্পলাইন নম্বরেও (9152987821) কল করতে পারেন। এখানে ফোন করতে হবে সোমবার থেকে শনিবার সকাল 8টা থেকে রাত 10টার মধ্যে।)
আরও পড়ুন:- বারবার দুঃস্বপ্ন দেখলে কি ঘটে ? রহস্য উদ্ঘাটন করলেন বিজ্ঞানীরা