Bangla News Dunia , দীনেশ :- আদালতের অনুমোদন ছাড়া দেশের কোনও প্রান্তে বেআইনি বলে দাগিয়ে দিয়ে কিছু গুঁড়িয়ে দেওয়া চলবে না, আগেই এই অর্ডার দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই অর্ডার অগ্রাহ্য করে তাঁদের বাড়িগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য চিহ্নিত করেছে অসম প্রশাসন, এই অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই রাজ্যের ৪৭ বাসিন্দা। তাঁদের পিটিশনের প্রেক্ষিতে অসম প্রশাসনকে আদালত অবমাননার নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি বি আর গভাই এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ অসম প্রশাসনকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখা অর্থাৎ বুলডোজ়ার না চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন :- বাংলাদেশকে ঋণ পরিশোধ করতে চাপ দিচ্ছে চিন, বিশবাঁও জলে বাংলাদেশের একাধিক প্রকল্প
উত্তরপ্রদেশ, অসম, মধ্যপ্রদেশের মতো একাধিক বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্তদের বাড়ি বুলডোজ়ার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ বিভিন্ন সময়ে উঠেছে সরকারের বিরুদ্ধে। সুপ্রিম কোর্ট এই সংক্রান্ত একটি মামলায় আগেই জানিয়েছে, শুধুমাত্র কোনও অপরাধে অভিযুক্ত বা দোষী সাব্যস্ত হলেই কারও বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া যায় না। প্রশাসনের যুক্তি ছিল, নির্মাণগুলো বেআইনি বলেই ভেঙে ফেলা হয়েছে। কিন্তু শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছিল, কোর্টের অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের কোনও বুলডোজ়ার চালানো যাবে না।
আরো পড়ুন :- এবার পাক ক্রিকেটারদের জন্য ফতোয়া জারি করলো পাক বোর্ড !
অসমের ৪৭ জন বাসিন্দার দাবি, সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী অর্ডার অগ্রাহ্য করেই তাঁদের টার্গেট করেছে অসম প্রশাসন। গত ২০ সেপ্টেম্বর গুয়াহাটি হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে অসমের অ্যাডভোকেট জেনারেলও আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁদের পিটিশন নিয়ে রায় না হওয়া পর্যন্ত কোনও বুলডোজ়ার চলবে না, কিন্তু প্রশাসন সেই আশ্বাস রাখছে না বলে অভিযোগ।
অসমের কামরূপে কচুতোলি পাথার গ্রামের এই ৪৭ বাসিন্দাদের দাবি, জমিমালিকদের সঙ্গে আইনি চুক্তি করেই দিনের পর দিন ওই এলাকায় বাস করছেন তাঁরা। তাঁদের কাছে আইনি কাগজপত্রও রয়েছে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসন তাঁদেরকে আদিবাসীদের জমি ‘জবরদখলকারী’ বলে দেগে দিয়ে বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য চিহ্নিত করেছে বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের আরও দাবি, বাড়ি খালি করার এক মাসের উচ্ছেদ নোটিসও তাঁদের দেওয়া হয়নি।
আরো পড়ুন :- ‘গদ্দার হঠাও, ভাঙড় বাঁচাও’, সায়নী ঘোষের নিশানায় বাহুবলী তৃণমুল নেতা !
এই পিটিশনের শুনানি চলছে আদালতে। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের নোটিস না দিয়ে এবং বক্তব্য না শুনে বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া সমানাধিকার, জীবনের অধিকার এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী।
ইতিমধ্যে অন্য একটি মামলায় ১৭ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট জানায়, জুডিশিয়াল অনুমোদন ছাড়া দেশের কোথাও বুলডোজ়ার চালিয়ে কোনও নির্মাণ গুঁড়িয়ে ফেলা যাবে না, ব্যতিক্রম শুধু— সরকারি রাস্তা, ফুটপাথ, রেললাইন বা জলাশয় জবরদখল। শীর্ষ কোর্টের সেই নির্দেশ সত্ত্বেও অসম প্রশাসন তাঁদের বাড়ি ভাঙতে উদ্যত বলে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ৪৭ জন। অসম প্রশাসনের অবশ্য দাবি, এখনও কোনও বাড়ি ভাঙা হয়নি।
#End