Bangla News Dunia , পল্লব : বন্যায় বাড়িঘর হারিয়ে দিশেহারা মানুষ। আশ্রয় শিবিরেও মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এই ছবি দেখা গিয়েছে। সাম্প্রতিক উদাহরণ বাংলাদেশ, চিন এবং কানাডা। আর গত কয়েকদিন অতি মাত্রায় বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গুজরাট। ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ত্রিপুরার একটা বড় অংশ। আর এই অতি মাত্রার বৃষ্টির পিছনে উঠে আসছে ‘উড়ন্ত নদী’ বা ‘বায়ুমণ্ডলীয় নদী’-র কথা। ‘উড়ন্ত নদী’ কী ?
আবহবিদরা বলছেন, দ্রুত উষ্ণ হয়ে উঠছে বায়ুমণ্ডল। আর এই উষ্ণ বায়ুমণ্ডল আগের তুলনায় অনেক বেশি আর্দ্রতা ধারণ করছে। আর এর ফলেই উড়ন্ত নদী বা বায়ুমণ্ডলীয় নদীর রূপ ধারণ করছে। উড়ন্ত নদী হল ভূপৃষ্ঠ থেকে বায়ুমণ্ডল পর্যন্ত লম্বা ও প্রশস্ত জলীয় বাষ্পের স্তম্ভ। যার উদ্ভব হয় সাধারণত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে।
এই উড়ন্ত নদী গুলো পৃথিবীর মধ্য-অক্ষাংশে থাকা জলীয় বাষ্পের প্রায় ৯০ শতাংশ বহন করে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, একটি বায়ুমণ্ডলীয় নদী গড়ে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ। মানবজাতিকে সতর্ক করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, অনেক সময় বায়ুমণ্ডলীয় নদী পাঁচ হাজার কিলোমিটারের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হয়। এই নদী গুলো ক্রমশ দীর্ঘ ও প্রশস্ত হচ্ছে। বায়ুমণ্ডলীয় নদী গুলি পৃথিবীর নতুন নতুন অঞ্চলে পৌঁছে যাচ্ছে।
তবে খালি চোখে এই বায়ুমণ্ডলীয় নদী দেখা যায় না। মানুষ শুধু দেখে কিছু পুঞ্জিভূত মেঘ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই নদীর অস্তিত্ব ইনফ্রারেড এবং মাইক্রোওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি দিয়ে দেখা যেতে পারে। এই কারণে বিশ্বজুড়ে জলীয় বাষ্প ও বায়ুমণ্ডলীয় নদী পর্যবেক্ষণে স্যাটেলাইট কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে।
বায়ুমণ্ডলীয় নদী সবসময়ই ছিল। কিন্তু, বিশ্বের গড় উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি জলীয় বাষ্প তৈরি হচ্ছে। বায়ুমণ্ডলীয় নদী গুলির রুদ্রমূর্তি ধারণের জন্য মানবসমাজকেই কাঠগড়ায় তুললেন ভূগোলের অধ্যাপিকা তথা যাদবপুরের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু। তিনি বলেন, “জলবায়ুর মধ্যে বিরাট পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। যেটার প্রধান কারণ উষ্ণায়ন।
সমুদ্রের কাছাকাছি থাকা দেশগুলিতে বেশি প্রভাব ফেলে উড়ন্ত নদী। এই উড়ন্ত নদীর রুদ্রমূর্তিতে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। পদ্মাপারের দেশ থেকে উড়ে এসে কি বাংলায় তাণ্ডব চালাবে উড়ন্ত নদী ? বঙ্গোপসাগর থেকে কলকাতা বেশি দূরে নয়। ঘূর্ণিঝড় থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বাংলাদেশের পাশাপাশি অনেক সময় বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে প্রভাব ফেলে। সেইরকম উড়ন্ত নদীর প্রভাব কি পড়বে কলকাতায়? আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা। #End