টিক টিক! ঢং ঢং! এক নাগাড়ে কলকাতা শহরের গল্প বলছে যে ৫ টা ঘড়ি, বিস্তারিত জানতে পড়ুন…..

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সময়কে মেপে রাখার কাজে ভারত, গ্রিস, চিন, মিশর এগিয়ে থাকলেও সময়ের হিসেব রাখার জন্য প্রথম ঘড়ি বানান ব্রিটিশরাই। ভারত ব্রিটিশদের উপনিবেশ থাকায় তাই ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতায় বেশ পুরনো কিছু ঘড়ি রয়েছে।

সময় বহিয়া যায় নদির মতো। সত্যিই তাই। আর সেই বয়ে যাওয়া সময়ের গল্প সবচেয়ে ভাল বলতে পারে ঘড়ি। কলকাতা শহরে এরকম কিছু আইকনিক ঘড়ি আছে, যা ইতিহাসকে জীবন্ত রেখেছে।

 

আজকের গল্প কলকাতার সেরকমই পাঁচটা আইকনিক ঘড়ি নিয়ে।প্রথম দিকে ইংরেজরা কলকাতা সহ দেশের নানা শহরেই ক্লক টাওয়ার বানিয়েছিলেন। মূলত সেগুলো হতো, চার্চের কাছাকাছি। প্রার্থনার সময় সম্পর্কে মানুষের যাতে একটা ধারণা থাকে, সেই জন্যই বসানো হতো ঘড়িগুলো। প্রথমেই বলি সেন্ট পল’স ক্যাথিড্রালের চুড়োর ঘড়িটার গল্প।

সেন্ট পল’স গির্জা

সেন্ট পল’স গির্জা বানানোর কাজ শুরু হয়েছিল ১৮৩৯ সালে, কাজ ফুরিয়েছিল ১৮৪৭ এ। লন্ডনের রাজ পরিবারের ঘড়ি যারা বানাতেন, ভুলেয়ামি পরিবার, তাঁরাই বানিয়েছিলেন ক্যাথিড্রাল স্ট্রিটের এই গির্জার মাথার ঘড়িটা। অক্সফোর্ডের ক্রাইস্ট চার্চের ঘড়ির আদলে বানানো হয়েছিল এই ঘড়ি। ভুলেয়ামি পরিবার স্যুইৎজারল্যান্ডের বাসিন্দা ছিলেন। অষ্টাদশ উনিশ শতকের বহু আইকনিক ঘড়ি কিন্তু এদের হাতেই তৈরি।

হাওড়া স্টেশনের বড় ঘড়ি

 

এবার আসি হাওড়া স্টেশনের বড় ঘড়ির কথায়। একশ বছর পরেও খুব সম্ভবত, শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় মিটিং পয়েন্ট, হাওড়া স্টেশনের বড় ঘড়ি। কত গল্পের, কত হিসেব মিলে যাওয়া আর না যাওয়ার হিসেব লেখা রয়েছে এই বড় ঘড়ির কাছে। হাওড়ার বিগ বেন হিসেবে পরিচিত এই বড় ঘড়ি তৈরি হয়েছিল, ১৯২৬ সালে। লন্ডনের বিগ বেনের ধাঁচে বানানো এই ঘড়ির ডায়াল ৪৫ ইঞ্চির। ঘন্টার কাঁটা ১৮ ইঞ্চি লম্বা, মিনিটের কাঁটার দৈর্ঘ্য ২৪ ইঞ্চি। দুমুখো এই ঘড়ি বানিয়েছিলেন লন্ডনের বিখ্যাত ইলেকট্রিক ঘড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা Gents of Leicester. একসময় অবশ্য ঘড়িটি ছিল দম দেওয়া।

আরও পড়ুন:- নিজেদের দেশেই ব্যান আর্জেন্তিনা ফুটবল সমর্থকরা! কারণ জানলে অবাক হবেন

জিপিও-র ঘড়ি

কলকাতার জিপিও-র ২২০ ফুটের গম্বুজের মাথায় বসা ঘড়িটাকে বাদ দিয়ে এই শহরের ঘড়ির গল্প অসম্পুর্ন থেকে যায়। এডওয়র্ডানিয়ান স্থাপত্য ইংল্যান্ডে জনপ্রিয় ছিল ১৯০১ থকে ১৯১৪-র মধ্যে। কলকাতার জিপিও, এই ধরনের স্থাপত্যের নিদর্শন। জিপিওর মাথার ঘড়িটির নকশা করেছিলেন ওয়াল্টার বি গ্র্যানভিল। ১৮৬৮ সালে ঘড়িটি তৈরি হয় লন্ডনে, সেটি পরে কলকাতা নিয়ে আসা হয়। সেই সময়ে ঘড়িটির দাম ছিল, ৭০০০ টাকা। জিপিওর উচ্চতা এবং কলকাতা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ার কারণেই জিপিও-র মাথায় বসানো হয়ছিল এই ঘড়ি।

নিউ মার্কেটের ঘড়ি

কলকাতা শহরের অন্যতম জনবহুল অঞ্চল হগ মার্কেটেও একটি ঘণ্টা ঘর রয়েছে। শোনা যায়, ১৯৩০ সালে সেই ঘড়িটি বসানো হয়েছিল। কেউ কেউ বলেন, ঘড়িটি ইংল্যান্ডের হাডারসফিল্ড থেকে জাহাজে করে নিয়ে আসা হয়েছিল। আগে প্রতি ঘণ্টায় ঘড়িটা বেজে উঠত ঢং ঢং করে। এখন অবশ্য সে সব হয়না, তবে ২০১৯ সালে একবার সারাইয়ের পর সময় দিচ্ছে দিব্যি। ক্লক টাওয়ারের চার দিকেই জিলেট অ্যান্ড জনস্টন কোম্পানির ঘড়িটার চারটে মুখ রয়েছে, অর্থাৎ যে দিক থেকেই তাকানো হোক না কেন, সময় দেখতে অসুবিধে হয়না।

ভীম নাগের ঘড়ি

বাঙালি মিষ্টি ভালবাসেন, অথচ ভীম নাগের জলভরা, লেডিকেনি খাননি, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আর ভীম নাগের দোকানে গিয়ে দোকানে বাংলায় লেখা দেওয়াল ঘড়িটা চোখে পড়েনি, এরকমটাও হয়ই না। ভিম নাগের ঘড়িটা কুক অ্যান্ড কেলভি কোম্পানির। সংস্থার মালিক ১৮৫৮ সালে ভীম চন্দ্র নাগের দোকানের মিষ্টি খেয়ে মিষ্টির প্রেমেই পড়ে যান। দোকানে কোনও ঘড়ি নেই দেখে তিনি একটি ঘড়ি উপহার দেন। নাগ মশাই জানিয়ে রেখেছিলেন, দোকানের কর্মচারীরা ইংরেজি পড়তে পারেন না, তাঁদের কথা মাথায় রেখেই লন্ডন থেকে তৈরি করে আনানো হলো বাংলা হরফে লেখা ডায়াল ঘড়ি।

আরও পড়ুন:- ADHD রোগে কমতে পারে আয়ুও, বলছে গবেষণা, জানুন বিস্তারিত

আরও পড়ুন:- BHEL সংস্থায় নতুন করে প্রচুর কর্মী নিয়োগ চলছে! আবেদন পদ্ধতি সহ বিস্তারিত দেখেনিন

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন