Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- আন্তঃরাজ্য পণ্য ও পরিষেবার ক্ষেত্রে আদায়যোগ্য আইজিএসটি (ইন্টিগ্রেটেড গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স) সংগ্রহে 2024-25 অর্থবর্ষে রাজ্য সরকার উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে । গত অর্থবর্ষের তুলনায় এবারে আইজিএসটি আদায়ে 21 শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি হয়েছে, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় চার হাজার কোটি টাকা । রাজ্য বাণিজ্য কর দফতরের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, 2023-24 অর্থবর্ষে যেখানে আইজিএসটি সংগ্রহ ছিল 18 হাজার কোটি টাকা, 2024-25 অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে 22 হাজার কোটি টাকায় ।
রাজ্য সরকারের এক আধিকারিককে এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট (আইটিসি)-এর ব্যবহার নিয়ে আরও সুসংগঠিত পরিকল্পনা, আইটিসি রিভার্সাল এবং নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সচেতন অ্য়ান্টি-ইভেশন (কর ফাঁকি রোধ) অভিযানে কারণেই এই সাফল্য এসেছে । বিশেষ করে 2024-25 অর্থবর্ষের শেষ দুই ত্রৈমাসিকে এই অভিযান আরও জোরালো হয় । আর এর ফলেই আইজিএসটি সংগ্রহ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে ।”
আরও পড়ুন:- পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ২৫ শতাংশ DA তে কার কত বকেয়া ? জানাতে পোর্টাল খুললো অর্থ দপ্তর
তিনি আরও বলেন, “ডেটা বিশ্লেষণের সময় যখনই কোনও অসঙ্গতি ধরা পড়েছে – যেমন, উচ্চ টার্নওভার অথচ তথ্যের অনুপস্থিতি, ভুয়ো সংযোগযুক্ত জিএসটি রেজিস্ট্রেশন, টিডিএস গরমিল ইত্যাদি – তখনই আমাদের অ্যান্টি-ইভেশন টিম ব্যবস্থা নিয়েছে ।”
নবান্ন সূত্রে খবর, 2024-25 অর্থবর্ষে রাজ্যের অ্যান্টি-ইভেশন টিম মোট 7300 জায়গায় অভিযান চালিয়ে প্রায় 2400 কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে । তুলনায় 2023-24 সালে অভিযান হয়েছিল 6900 জায়গায় এবং তখন এক হাজারেরও বেশি আইটিসি জালিয়াতি ধরা পড়ে, যার থেকে আদায় হয়েছিল মাত্র 230 কোটি টাকা ।
এখানেই শেষ নয়৷ নবান্নের তথ্য বলছে, আধার ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের ফলে কমেছে ভুয়ো জিএসটি রেজিস্ট্রেশন । 2024 সালের অগস্ট থেকে রাজ্য সরকার জিএসটি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে আধার-ভিত্তিক বায়োমেট্রিক যাচাই বাধ্যতামূলক করেছে । এর ফলে ভুয়ো রেজিস্ট্রেশনের প্রবণতা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে । আগে প্রতি মাসে গড়ে যেখানে 8500টি আবেদন জমা পড়ত, আধার যাচাই চালুর পর তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারে । একাধিক সংস্থা ও ব্যক্তিদের ভুয়ো পরিচয় দিয়ে জিএসটি রেজিস্ট্রেশন করার প্রবণতা কমেছে বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা ।
নবান্নের তথ্য আরও বলছে, 2024-25 অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট জিএসটি আদায় হয়েছে 46 হাজার 893 কোটি টাকা, যা আগের অর্থবর্ষের তুলনায় প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা বেশি । রাজ্য অর্থ দফতর মনে করছে, প্রযুক্তিনির্ভরতা এবং তথ্যভিত্তিক কৌশল, একই সঙ্গে অ্যান্টি-ইভেশন টিমের সক্রিয় কর্মকাণ্ডের ফলে রাজস্ব আদায়ে এই বিরাট সাফল্য এসেছে ।
এর ফলে একদিকে যেমন কর ফাঁকি রোধে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে রাজ্য, অন্যদিকে করদাতাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সঠিক তথ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ে নতুন দিশা খুলছে সরকার । আধার যাচাইকরণ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপ আগামিদিনে আরও রাজস্ব বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন নবান্নের আধিকারিকরা ।
আরও পড়ুন:- Pan Card থাকলে 10,000 টাকা জরিমানা! আয়কর বিভাগের নির্দেশ। ব্যাপারটা কি ?
