ভিনদেশি শত্রুর কারণে বিপাকে রাজ্যের মৌ-চাষ শিল্প, বিস্তারিত জেনে নিন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বিপজ্জনক কীট প্রজাতি হল ‘স্মল হাইভ বিটল’ বা “ছোট চাক পোকা”। এর বৈজ্ঞানিক নাম- এথিনা টুমিডা (Aethina Tumida)। এটি ‘কোলিওপটেরা’ বর্গের ‘নিটিডিউলিডি’ গোষ্ঠীর অন্তর্গত একটি কীটের প্রজাতি ৷ যেটি মৌমাছিদের শত্রু এবং মৌচাকের ক্ষতি করে ৷ এটি বিশ্বব্যাপী মৌ-চাষ শিল্পের শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে ৷

উদ্বেগজনকভাবে এই ভয়ঙ্কর বিটল প্রজাতিটি ভারতীয় উপমহাদেশে প্রবেশ করেছে ৷ সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর 24 পরগনা জেলার আমডাঙ্গা অঞ্চলের একটি মৌমাছি পালন কেন্দ্রে এই প্রজাতির উপস্থিতি প্রথম নজরে পড়েছিল জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তরুণ বিজ্ঞানী ঝিকমিক দাশগুপ্তর ৷ সাম্প্রতিক আবিষ্কারটি ‘জার্নাল অফ এনভারমেন্ট এন্ড সোশিও বায়োলজি’ (Journal of Environment and Sociobiology) গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হয় ৷

বিজ্ঞানী ঝিকমিক দাশগুপ্ত সতর্ক করেছেন যে, এই ছোট চাক পোকা মৌ-চাষের সাংঘাতিক ক্ষতি করতে পারে ৷ কারণ, প্রজাতিটি খুব দ্রুত বংশবৃদ্ধি করতে পারে এবং ছড়িয়ে পড়ে ৷ এই পতঙ্গের আক্রমণ ও তাদের ধ্বংসলীলা দেখে বিজ্ঞানীদের কপালে ভাঁজ গভীর হয়েছে ৷

1867 সালে সাব-সাহারান আফ্রিকায় আবিষ্কৃত হওয়ার পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (1999), নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া (2002), কানাডা (2007), ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ (2010), ব্রাজিল (1015), এশিয়ার ফিলিপিন্স (2016), চিন এবং দক্ষিণ কোরিয়া (2017)-তে এই চাক পোকার আক্রমণ লক্ষ্য করা যায় ৷ অবশেষে, ভারতও এই পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচল না ৷ অনুকূল পরিবেশের কারণে, ভারতের মতো দেশের বিস্তৃত অঞ্চলে এই পোকা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে ৷

একটি প্রাপ্তবয়স্ক চাক পোকা প্রায় 5-7 মিলিমিটার লম্বা, লালচে বাদামি রংয়ের, ডিম্বাকৃতি চেহারার হয় ৷ স্ত্রী চাক পোকা মৌ-চাষের বাক্সের ফাঁকে ঢুকে গিয়ে ডিম পাড়ে ৷ ডিম ফুটে বের হওয়ার পর পোকার ছোট লার্ভা মৌমাছিদের সঞ্চিত পরাগরেণু, মধু, মৌমাছির ডিম ইত্যাদি খেয়ে ফেলে এবং মৌচাকের মধ্যেই মলত্যাগ করে ৷ এর ফলে মধু খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে যায় ৷

মৌমাছিরা যখন পোকাগুলিকে তাড়াতে যায়, ওরা তখন সাময়িকভাবে মৌ-চাষের বাক্সের ফাটলের মধ্যে বা খোপগুলির মধ্যে লুকিয়ে পড়ে ৷ চাক পোকাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মৌমাছিরা অনেক সময় মৌচাক ছেড়ে চলে যায় ৷ এই চাক পোকা একের পর এক মৌচাক নষ্ট করে ও মৌচাকের মধুর ঘনত্ব কমিয়ে তরল করে দেয় ৷ এর আক্রমণে মৌচাকের মধু নিকৃষ্ট মানের হয় বলেও জানাচ্ছেন গবেষকরা ৷

কীভাবে এই চাক পোকার আক্রমণ থেকে মৌমাছি ও মৌচাকের সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়, এটাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ বিজ্ঞানীদের কাছে ৷ বিজ্ঞানী ঝিকমিক দাশগুপ্ত এই ভয়ঙ্কর পোকার নেতিবাচক প্রভাবের বিরুদ্ধে একটি ‘জৈব নিরাপত্তা’ ব্যবস্থা তৈরির আশায় গবেষণা করছেন বলে জানিয়েছেন ৷

আরও পড়ুন:- স্বামী, স্ত্রী এক সঙ্গে একাউন্ট খুললে মাসে ৯২৫০ টাকা পাবেন পোস্ট অফিসের এই স্কিমে, জেনে নিন বিস্তারিত

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন